বদলগাছী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

নওগাঁর বদলগাছীতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক বাছাই কমিটিতে দলীয় স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। তিনি নিয়মনীতির কোনো প্রকার তোয়াক্কা না করেই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাহাড়পুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান কিশোর এবং সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২৪ বাছাই কমিটিতে নিয়ে আসেন। তারা বাছাই কমিটির ভাইভাতে শিক্ষকদের প্রশ্নও করেন। এ নিয়ে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। জানা যায়, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম গত ২৯ আগস্ট তরিখের স্বাক্ষরিত একটি নোটিশে উপজেলা পর্যায়ে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২৪ বাছাই কমিটির সভা ২ সেপ্টেম্বর আহ্বান করেন। তার স্বাক্ষরিত চিঠিতে দেখা যায় উক্ত কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সদস্য সচিব উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। কমিটির সদস্য হিসেবে থাকবেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকৌশলী, অফিসার ইনচার্জ, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর, জ্যেষ্ঠ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার, বদলগাছী মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রিড়া শিক্ষক ও বদলগাছী লাবণ্য প্রভা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক শিক্ষক। কমিটিতে না থাকলেও নিয়ম বহির্ভূতভাবে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাহাড়পুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান কিশোর এবং সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে ডেকে নেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় শিক্ষা পদক প্রাপ্তির জন্য অংশগ্রহণকারী শিক্ষক জানান, বাছাই কমিটিতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাহাড়পুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান কিশোর এবং সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আনোয়ার হোসেন বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন। এ বিষয়ে সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাকে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ডেকেছে, আমি গিয়েছি এবং প্রশ্ন করতে বলেছে প্রশ্ন করেছি। এর বেশি আমি কিছু জানি না। জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাহাড়পুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান কিশোর বলেন, আমি একটা শিক্ষা কমিটির সদস্য। তবে বাছাই কমিটির কেউ না। আমাকে প্রশ্ন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু আমি করিনি। কারণ শিক্ষক বাছাই করার যোগ্যতা আমার নেই। বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা কমিটির একটি সভার জন্য ওনারা এসেছিলেন। পাশাপাশি দুটি কমিটির মিটিং থাকায় ওনারা এসে আর জাননি। ভাইভাতে এমনি দু একটা প্রশ্ন করেছিলেন। ওনারা বাছাই কমিটির ভাইভাতে উপস্থিত থাকতে পারেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান। বাছাই কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান বলেন, ব্যস্ততার কারণে আমি সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিলাম না। কমিটির সদস্য না হলে কোনোভাবেই সেখানে থাকার কথা নয়। যদি এমনটি হয়ে থাকে তার জবাব প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকেই দিতে হবে।